এদেশে স্থলভূমি গড়েই উঠেছে নদীর সাথে বয়ে আসা পলি থেকে, যেখানে ব্যাপ্তি পেয়েছে নদীকেন্দ্রীক জীববৈচিত্র্য। পানির সহজলভ্যতার সূত্র ধরে প্রাচীন যুগ থেকেই মানুষ নদ-নদীর তীরবর্তী সমতল ভূমিতে বসবাস করে এসেছে। গড়ে উঠেছে নদীকেন্দ্রীক বসতি স্থাপন ও জীবিকার যোগান। অবিচ্ছেদ্য হয়ে উঠেছে মানুষের সাথে নদীর সম্পর্ক।
নদীর সাথে জুড়ে আছে আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবিকা, লোকালয়, সংস্কৃতি, সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন কল্প-কথা, এমনকি ঠিকানাও। পরিবহন, সেচ এবং পুষ্টির জন্য জল সরবরাহ করে এসেছে জালের মতো ছড়ানো নদীগুলো। ফলে নদীর গতিপ্রকৃতি ও চরিত্রের যেকোনো পরিবর্তন ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে আমাদের আর্থ-সামাজিক জীবনধারাতেও।
সপ্তদশ শতকের সমস্ত সরকারী নোটিশ এবং আইনী নথিতে বাংলার অঞ্চলটিকে ‘আবদে জান্নাত’ বা বাঙ্গালিকে স্বর্গের জাতি বলা হয়েছিল। এমনকি ৭১ সালে স্বাধীনতার সময়ও বাংলাদেশে প্রায় ১২০০টি নদী-নালা ছিল। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হল যে এই নদীগুলির বেশিরভাগই মানবসৃষ্ট ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। অনেক নদী হয়ে যাচ্ছে বিলীন।
এছাড়াও ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের প্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক-রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত এই স্বর্গকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অস্বাভাবিক তাপমাত্রা পরিবর্তন, নদীর সম্পদের অধিকার নিয়ে সংঘর্ষ, নদী দখল, জলপথের যানবাহন, বালু উত্তোলন, অধিক সেচ এবং কীটনাশক প্রয়োগের জন্য নদীগুলির রূপ পরিবর্তন হচ্ছে। তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, করতোয়ার মতো বিশাল নদীগুলো ছোট ছোট খালে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ ‘আব্দে জান্নাত’ (স্বর্গের জাতি) থেকে এক ‘দুর্যোগপ্রবন দেশে’ পরিণত হয়েছে।
কেমন আছে আমাদের এই নদীগুলি এখন? আর কেমন আছে এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা মানুষ এবং অন্যান্য জীববৈচিত্রের জীবনধারা?
এ সকল বিষয় যদি আপনাকে ভাবিয়ে তোলে, তাহলে আপনার মতই তরুণ শিল্পী, আলোকচিত্রী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য এবার এসেছে আর্থ 360° প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার এবছরের বিষয় ‘নদী এবং নদীনির্ভর জীবন’। নদীগুলির সৌন্দর্য, বৈচিত্র্য, অস্তিত্বের লড়াই এবং তাদের উপর নির্ভরশীল জীবনগুলোর গল্প তুলে আনুন আপনার চিত্রকর্ম বা ক্যামেরার লেন্সে। সাংস্কৃতিক চর্চা, জীববৈচিত্র্য এবং নদীর বাস্তুতন্ত্রের উপর মানুষের কার্যকলাপের প্রভাবসহ নদীকে ঘিরে জীবনগুলোর বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তুলুন আপনার শিল্পকর্ম, আলোকচিত্র, ভ্লগ কিংবা ভিডিওচিত্রে এবং জিতে নিন আকর্ষণীয় পুরস্কার।
These rules and regulations are meant to ensure fairness, originality, and appropriate content in the Earth 360 contest. Participants should carefully read and adhere to the guidelines provided by the contest organizers.